প্রভাবশালী বিএনপি নেতা মোশাররফ হোসেনের ক্ষমতার প্রভাব খাটিয়ে ভুয়া ওয়ার্ক অর্ডার দিয়ে জেটি ঘাটের কাজ বাগিয়ে নেয়ায় ক্ষতিগ্রস্ত ভুমি মালিকরা মানববন্ধন করেছে। তাদের স্বার্থ রক্ষার্থে প্রকৃত ঠিকাদারকে বহাল রাখার দাবি জানিয়েছেন তারা।
শনিবার (১০ মে) বেলা ১২টায় কলাপাড়ার ১৩২০ মেগাওয়াট তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের জেটি ঘাটে এ মানববন্ধন করে কলাপাড়া উপজেলার ধানখালি ইউনিয়নের মরিচবুনিয়া গ্ৰামের বাসিন্দারা।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, বর্তমান ঠিকাদারকে বাদ দিতে একটি মহল বিএনপি নেতাদের প্রভাব খাটিয়ে ভুয়া ওয়ার্ক অর্ডার তৈরি করে তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের জেটি ঘাটের মালামাল লোড আনলোড করার কাজ বাগিয়ে নিতে চাচ্ছে। এটা সফল হলে এই এলাকার শতাধিক পরিবার না খেয়ে মরার উপক্রম হবে। কর্মহীন হয়ে পড়বে শতাধিক শ্রমিক। এ অবস্থা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের একান্ত হস্তক্ষেপে প্রকৃত ঠিকাদারকে বহাল রাখার দাবি জানান ভুক্তভোগী পরিবারগুলো।
মানববন্ধনে উপস্থিত মোঃ মন্টু ফকির বলেন, এখানে দীর্ঘদিন ধরে এলাকার লোকজন মালামাল লোড আনলোড করার কাজ করছে। এখন যদি অন্য লোক এই কাজ বাগিয়ে নেয় তাহলে অনেক মানুষ কর্মহীন হয়ে পড়বে। তাই পূর্বের ঠিকাদারকে বহাল রাখার দাবি জানাই।
মোঃ হিরন খান বলেন, এখানে পুরুষদের পাশাপাশি অনেক নারী শ্রমিকরাও কাজ করে। এই কাজ ভুয়া একটি কাগজ বানিয়ে কেউ হাতিয়ে নিলে তা মেনে নেয়া হবে না। তাছাড়া এই তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণে আমাদের সবার কমবেশি জমি অধিগ্রহণ হয়েছে। তাই আমরা যদি এই কাজে থাকতে না পারি তাহলে তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের জেটি ঘাটের মালামাল লোড আনলোড কাজ বন্ধ করে দেয়া হবে।
বর্তমান ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মিফতা ট্রেডার্সের প্রোপাইটর মোঃ শাহিন মৃধা জানান, ‘এই কাজ পাওয়ার পর উক্ত এলাকার শতাধিক মানুষ নিয়ে কাজ করেছি। বর্তমান বিএনপি নেতা মোশাররফ হোসেনের ক্ষমতার প্রভাব খাটিয়ে যে কাজটি বাগিয়ে নিতে চাচ্ছে তাকে এই প্রজেক্টে আমি নিজে যুক্ত করেছি। এখন আমাকে না জানিয়ে ভুয়া একটি ওয়ার্ক অর্ডার তৈরি করে কাজটি বাগিয়ে নিতে চাচ্ছে। মূলত এখানে কোনো ওয়ার্ক অর্ডারের কোনো বিষয় নেই। এখন যে কাজ নিতে চাচ্ছে সে কাজ পেলে এই এলাকার অনেক মানুষ বেকার হয়ে পড়বে। তাই কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি সঠিকভাবে বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত নেয়ার দাবি জানাই।’
ভুয়া ওয়ার্ক অর্ডার বানিয়ে কাজ বাগিয়ে নিতে চাওয়া অভিযুক্ত আমিনুল ইসলাম মহাসিন বলেন, আমি সকল প্রক্রিয়া সঠিকভাবে সম্পন্ন করে ওয়ার্ক অর্ডার নিয়েছি। এখানে কোনো জালিয়াতি করা হয়নি। এছাড়া ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাবাসীদের নিয়েই কাজ করা হবে।
তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের কাজ করা সিঙ্গাপুরি প্রতিষ্ঠান দাভাজুলি’র বরিশালের ডিজিএম অপারেশন লেফটেন্যান্ট কমান্ডার মোঃ মনির হোসেন বলেন, কাজ কে করবে না করবে এটা কোম্পানির বিষয়, তবে এলাকাবাসীর বিষয়টি আমি কোম্পানিকে জানাবো। তারা বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত নিবে।